ঈদের দিনের সুন্নতসমূহ:
১.অন্যদিনের তুলনায় সকালে ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়া। (বায়হাকী)
২.মিসওয়াক করা। (তাবয়ীনুল হাকায়েক)
৩.গোসল করা। হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) দুই ঈদের দিন গোসল করতেন। (মুসনাদে বাযযার) ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত যে, তিনি ঈদুল ফিতরের দিন ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে গোসল করতেন। (মুয়াত্তা ইমাম মালেক)
৪.শরীয়তসম্মত সাজসজ্জা করা।(বুখারী)
৫.সামর্থ অনুপাতে উত্তম পোশাক পরিধান করা। ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত যে তিনি দু ঈদের দিনে সুন্দরতম পোশাক পরিধান করতেন। ( বায়হাকী )
৬.সুগন্ধি ব্যবহার করা।(মুস্তাদরাকে হাকেম)
৭.ঈদুল ফিতরে ঈদগাহে যাবার আগে মিষ্টিজাতীয় যেমন খেজুর ইত্যাদি খাওয়া। তবে ঈদুল আযহাতে কিছু না খেয়ে ঈদের নামাযের পর নিজের কুরবানীর গোশত আহার করা উত্তম।
বুরাইদা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) ঈদুল ফিতরের দিনে না খেয়ে বের হতেন না, আর ঈদুল আজহার দিনে ঈদের নামাজের পূর্বে খেতেন না। সালাত থেকে ফিরে এসে কুরবানীর গোশত খেতেন। (মুসনাদে আহমদ ) আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ (সা.) ঈদুল ফিতরের দিন কয়েকটি খেজুর না খেয়ে বের হতেন না, আর খেজুর খেতেন বে-জোড় সংখ্যায়। (বুখারী )
৮.সকাল সকাল ঈদগাহে যাওয়া। (আবু দাউদ)
৯.ঈদুল ফিতরে ঈদগাতে যাওয়ার পূর্বে সদকায়ে ফিতর আদায় করা। ইবনু উমর (রা.) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (সা.)লোকদেরকে ঈদের নামাজের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার পূর্বেই সাদকাতুল ফিত্র আদায় করার নির্দেশ দেন।(বুখারী)
১০.পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া। আলী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : সুন্নত হল ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া। (তিরমিযী )
১১.ঈদের নামায ঈদগাহে আদায় করা, বিনা অপরাগতায় মসজিদে আদায় না করা। (বুখারী, আবু দাউদ) ১২.যে রাস্তায় ঈদগাতে যাবে, সম্ভব হলে ফিরার সময় অন্য রাস্তা দিয়ে ফিরা। (বুখারী)
১৩.ঈদুল ফিতরে ঈদগাহে যাবার সময় আস্তে আস্তে এই তাকবীর পড়তে থাকাঃ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ وَلِلَّهِ الْحَمْدُ তবে ঈদুল আযহায় যাবার সময় পথে এ তাকবীর আওয়াজ করে পড়তে থাকবে।
(মুস্তাদরাকে হাকেম) ঈদের দিনের মুস্তাহাবসমূহ
১. সাধ্যানুযায়ী অধিক পরিমাণে দান খয়রাত করা। (আদ্দুররুল মুখতার)
২. আল্লাহর পক্ষ থেকে ঈদ মনে করে আনন্দ এবং খুশি প্রকাশ করা। (তাহতাবী আলা মারাকিল ফালাহ)
৩. নিজ মহল্লার মসজিদে ফজরের নামায আদায় করা। ফজরের নামায জামা‘আতের সাথে সর্বদা আদায় করা অত্যন্ত জরুরী এবং ওয়াজিব। তবে দুই ঈদের ফজরের নামায মহল্লার মসজিদে জামা‘আতের সাথে আদায় করা অতি উত্তম। (তাহতাবী আলা মারাকিল ফালাহ)
ঈদের নামায আদায়ের তরীকা:
প্রথমে কান বরাবর উভয় হাত তুলবে। তারপর এই ভাবে নিয়ত করবে যে “আমি ঈদুল ফিতর বা ঈদুল আযহার দুই রাকা‘আত ওয়াজিব নামায এই ইমামের পিছনে পড়ছি।” অতঃপর তাকবীরে তাহরীমা বলে হাত নাভির নিচে বাঁধবে এবং ছানা “সুবহানাকা…” পুরা পড়বে। তারপর আরো তিন বার তাকবীর বলবে। প্রথম দুইবার হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে আল্লাহু আকবার বলে হাত ছেড়ে দিবে। এরপর তৃতীয় বার হাত কান পর্যন্ত তুলে আল্লাহু আকবার বলে হাত বেঁধে চুপ করে ইমামের কিরাআত শ্রবণ করবে। এভাবে প্রথম রাকা‘আত আদায়ের পর দ্বিতীয় রাকা‘আতের কিরাআতের পর তিন বার হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে প্রত্যেকবার আল্লাহু আকবার বলে হাত ছেড়ে দিবে। এরপর চতুর্থ বার হতা না তুলে আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যাবে এবং অবশিষ্ট নামায অন্যান্য নামাযের ন্যায় সম্পন্ন করবে। (নূরুল ইজাহ)